বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুচলেকা দিয়ে গেছে সে, আমি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করব, তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ধরে এনে সাজা বাস্তবায়ন করব।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথ সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমেরিকা খুনি পালছে একটা, আবার কানাডা পালে আরেকটা; পাকিস্তানে আছে দুইটা। সবার কাছে বলব, এই খুনিদের ফেরত পাঠাতে হবে। আর ব্রিটিশ সরকারকে বলব, তারেক জিয়াকে দেশে ফেরত পাঠাতে। কারণ সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারা (বহির্বিশ্ব) মানবতার কথা বলে, দুর্নীতির কথা বলে, আবার সেই খুনি-দুর্নীতিবাজকে তাদের দেশে আশ্রয় দেয়। কাজেই তাকে বাংলাদেশের কাছে হ্যান্ডওভার করতে হবে। এ দেশে নিয়ে এসে সাজা আমি বাস্তবায়ন করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশ আমাদের দেশের গণতন্ত্রের কথা বলে, তাদের দেশের অবস্থা তো আমরা জানি। প্রতিদিন মানুষ খুন হয়, ভোটের সময় ভোট চুরি হয়েছে বলে তাদের ক্যাপিটাল হোমেও আক্রমণ হয়। পাঁচ-ছয় জন গুলি করে মারে। আর তাদের কাছ থেকে আমার গণতন্ত্রের ছবক নিতে হবে!
কারো গায়ে হাত দিলে আর ক্ষমা করা হবে না জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, এরা (বিএনপি) কীভাবে অত্যাচার করেছে, সেটা তুলে ধরতে হবে। বিএনপির অপকর্ম তুলে ধরতে হবে। আমাদের যেসব নেতাকর্মী বিএনপির হাতে মার খেয়েছে, তাদের তো বসে থাকলে চলবে না। মানুষকে জানাতে হবে ওরা কী করতে পারে, কী করে। বসে বসে আর মার খাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, অগ্নি সন্ত্রাসীদের, স্বাধীনতা বিরোধীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না, এটা পরিষ্কার কথা। ওরা আমাদের উৎখাত করবে? ওরা পকেট থেকে এসেছে আবার পকেটেই থাকবে। গণতন্ত্রের কথা ওদের মুখে মানায় না। এবার যেন আর কোনো বিআরটিসির বাস পোড়াতে না পারে। যেটা পোড়াতে যাবে, এখন তো সবার হাতে ক্যামেরা, ভিডিওি ফুটেজ দেখে যেই হাতে আগুন দেবে, সেই হাত সঙ্গে সঙ্গে পুড়িয়ে দিতে হবে। কোনোদিন বলিনি, এখন বলব; আর মার খাওয়ার সময় নাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হলো আমি তখনই দেশে চলে আসি। ওর বাপও তো আমাকে ঠেকাতে পারেনি। তারেক জিয়ার বাপও আমাকে ঠেকাতে পারেনি। আবার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, তখনও পারেনি। এতই নেতৃত্ব দেওয়ার শখ, দেশেরে বাইরে পালিয়ে থেকে কেন? ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, সেই সুযোগে ডিজিটালি কথা বলে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না, এটা আমার পরিষ্কার কথা। প্রত্যেকটা এলাকায় নেতাকর্মীরা মাঠে থাকতে হবে। আর আমাদের যতগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তাদের বলতে হবে, তারা কি শান্তিতে থাকতে চায় নাকি আবার অশান্তিকে জায়গা দিতে চায়। তাদের সিদ্ধান্ত দিতে হবে। জ্বালাও-পোড়াও, হত্যা, খুন, মানি লন্ডারিং করে- এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের শান্তি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না। সবাই প্রস্তুত থাকেবন বাংলাদেশের কোনো মানুষের একটু ক্ষতিও যেন করতে না পারে। দোকানপাট সবাইকে বলে দেবেন তারাও যেন প্রতিবাদ করে। এর আগে বহু যন্ত্রণা দিয়েছে তারা। আমরা অনেক সহ্য করেছি। এভাবে আমার কৃষক শ্রমিক, আমাদের নেতাকর্মী কারো গায়ে হাত দিলে আর ক্ষমা নাই।
গণমাধ্যমের মালিকদের উদ্দেশ্যে সরকার প্রধান বলেন, যে সমস্ত মিডিয়া এখন ধরনা দিচ্ছে, এত টেলিভিশন, এ তো আমারই দেওয়া। আমি যদি উন্মুক্ত না করে দিতাম এত মানুষের চাকরিও হতো না; এত মানুষ ব্যবসাও করতে পারত না। আর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সে বিএনপির ব্যবসায়ীই হোক বা আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী হোক, সবাই কিন্তু শান্তিতে ব্যবসা করেছে। হাওয়া ভবনও আমরা খুলি নাই, খাওয়া ভবনও আমরা খুলি নাই বরং ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছি। আবারও হাওয়া ভবন আসলে, এখন আসলে আরেকটা নাম দেবে। আবারও চুষে চুষে খাবে। শান্তিতে ব্যবসা করতে দেবে না।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।